তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাথে সম্প্রতি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সাক্ষাতকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের সমালোচনা বা ত্রুটি বিচ্যূতি ধরিয়ে দেয়ার জন্য সরকার কোনো গণমাধ্যমের ওপর হস্তপে করে না। দেশে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করলে তা গণতন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের জন্য এবং সমাজকে এগিয়ে নেবার জন্য সহায়ক হয়।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ এসময় যে দাবিগুলো পেশ করেন তার মধ্যে রয়েছে, একটি নতুন প্রেস কমিশন গঠন, সকল বিভাগীয় সদরে পিআইবির শাখা স্থাপন, দেশে-বিদেশে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গ্রামীণ সাংবাদিকদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রেস কাউন্সিলে নিষ্পত্তি করা...
সকল সাংবাদিককে নিয়োগপত্র প্রদান ও বেতন বোর্ড রোয়েদাদ অনুযায়ী বেতন ভাতা দান, সাংবাদিক পেনশন স্কীম, গ্র”প বীমা ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান, সকল সংবাদপত্রে সরকারী বিজ্ঞাপন বন্টনে সুষম নীতি অনুসরণ এবং বিজ্ঞাপন যেন সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার না হয় তা লক্ষ্য রাখা, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক ও তার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া, গণমাধ্যমে ফ্রিল্যান্স বা খন্ডকালীন সাংবাদিকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, বেকার সাংবাদিকদের কর্মসংস্থান বা বেকার ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা, দেশের সংবাদপত্রে প্রেরিতব্য চিঠিপত্রের ডাকমাসুল ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা এবং অনলাইন নিউজ পেপার ও নিউজ পোর্টালের জন্য সহজ ও গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করা। তথ্যমন্ত্রী এসকল প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা করে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মুহম্মদ আলতাফ হোসেন’র নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে স্থায়ী পরিষদ সদস্য মীর লিয়াকত আলী, সহ-সভাপতি সামসুল আলম জুলফিকার. সহ-সভাপতিমোঃ নুরুজ্জামান প্রধান, মহাসচিব এবিএম লুৎফর রাশিদ রানা, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান মোল্লা, সহকারী মহাসচিব মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন, সহকারী মহাসচিব এম এ আউয়াল, সহকারী মহাসচিব কাজী সিরাজুল ইসলাম, সহকারী মহাসচিব এম এ মান্নান ভূঁঞা, অর্থ সচিব মোঃ শাহাদাত হোসেন রিটন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সচিব মোঃ আলমগীর গনি, বিদেশ সচিব মুহাম্মদ আবু হানিফ খান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোবারক হোসেন, খান চমন-ই-এলাহি, আহম্মেদ আলী, মোশাররফ হোসেন সিদ্দিকী, ডাঃ মহিদার রহমান, মিজ শাহানা হক, মিজ রাবেয়া খাতুন শিমুল, এম এ মজিদ, খোন্দকার এরফান আলী বিপ্লব, এডভোকেট আসাদুল্লাহ বাদল এবং আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেল এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার অপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে বিএনএস জানায়, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার পঁচিশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ অপরাহ্নে তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনুর সাথে তার সচিবালয় সভাকক্ষে মত বিনিময় সভায় মিলিত হয়। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মুহম্মদ আলতাফ হোসেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে আরও ছিলেন স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর লিয়াকত আলী, এডভোকেট খান চমন-ই-এলাহী, সহসভাপতি নুরুজ্জামান প্রধান ও সামসুল আলম জুলফিকার, মহাসচিব এ্যাডভোকেট লুৎফর রশিদ রানা, যুগ্ম মহাসচিব শাহজাহান মোল্লা, সহকারী মহাসচিব এম এ আউয়াল, কাজী সিরাজুল ইসলামী ও এম. এ মান্নান ভুইঞি এবং অর্থসচিব শাহাদাত হোসেন রিটন প্রমুখ।
এই মত বিনিময় সভায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানারকম অপরাধমূলক তৎপরতার চিত্র তুলে ধরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জাতীয় সাংবাদিক অধিকার সনদ ও সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবী জানান। তারা দেশে একটি সুস্পষ্ট গণমাধ্যম শিল্পনীতি ঘোষণারও আহবান জানান। সাংবাদিকদের ব্যাপারে সকল অভিযোগের নিস্পত্তি প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করার জন্য তারা মন্ত্রীর দৃুষ্টি আকর্ষণ করেন।
বর্তমানে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক কিাশের প্রেক্ষিতে একটি প্রেস কমিশন গঠনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণের জন্যও মন্ত্রীকে প্রতিনিধি দলটি অনুরোধ করেন।
তারা ইতিপুর্বে যে সকল সাংবাদিক নিহত,গুম বা আহত হয়েছেন বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে তার একটি সুরাহা করা এবং দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহবান জানান যাতে ভবিষ্যতে অনুরূপ ঘটনা আর না ঘটে।
সাংবাদিকতা যেহেতু একটি জনকল্যাণমূলক পেশা সেহেতু শিক্ষকদের মতো সাংবাদিকদের বেতন ভাতা সরকারী কোষাগার থেকে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা দাবী জানিয়েছে।
দেশের সর্বস্তরের সাংবাদিকদেও কল্যাণে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আদলে একটি জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের জন্যও সংস্থা দাবী জানিয়েছে।
দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতির প্রেক্ষিতে দক্ষ সাংবাদিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা এবং দেশের সকল বিভাগীয় সদরে প্রেস ইন্সটিটিউটের শাখা প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবী বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।
গণতন্ত্র বিকাশে ভিন্নমত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রেখে বন্ধ সকল মিডিয়া খুলে দেয়ার জন্য প্রতিনিধি দলটি মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।