মুন্সীগঞ্জ, ২০ জুন ২০১৪ (বাসস) : পর্যায়ক্রমে সারাদেশের সকল পুরাকৃতি সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
মুন্সীগঞ্জের যদুনাথ রাজার বাড়ির প্রাচীন ক্ষতিগ্রস্থ স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের আশ্বাস প্রদান করে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সারাদেশের সকল পুরাকৃতি সংরক্ষণ করার জন্য বর্তমান সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আজ শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর যদুনাথ রাজার বাড়িতে বিক্রমপুর জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে সংস্কৃতি মন্ত্রী এ কথা বলেন।
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূহ উল আলম লেনিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ্যাটর্নী জেনারেল মাহাবুবে আলম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ড. আবুল বারাকাত, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, স্থানীয় সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জাদুঘরটির দ্বার উন্মোচনের পর সংস্কৃতিমন্ত্রী দুপুর দেড়টায় জাদুঘরের পাশের পুকুরের ঐতিহ্যবাহী সামপান ভাাসিয়ে নৌকা জাদুঘরেরও উদ্বোধন করেন।
এ জাদুঘরে সভ্যতার জনপদ বিক্রমপুরের অনেক মূল্যবান নিদর্শন স্থান পেয়েছে। জাদুঘরটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রদর্শনের জন্য খোলা থাকবে। বিক্রমপুরের অতীত ঐতিহ্য ও প্রত্ন নিদর্শনাদি সংরক্ষণ করা এবং সর্বোপরি প্রদর্শনের জন্য অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন বহুমুখী এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়িখাল ইউনিয়নের অন্তর্গত সাবেক জমিদার যদুনাথ রায়ের পরিত্যক্ত বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে সেখানে ‘বিক্রমপুর জাদুঘর’ নামে একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ করে। সরকারের অর্থ সাহায্যে নির্মিত এই ভবনটি ২০১৩ সালের ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। মূল্যবান প্রাচীন সামগ্রী জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য জমা দিতে সর্ব সাধারণের প্রতি আহবান জানিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কছে যে মূল্যবান প্রাচীন সামগ্রী রয়েছে, সেগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য জমা করলে জাদুঘরটি যেমন সমৃদ্ধ হবে তেমন আপনাদের মূল্যবান নিদর্শনও যথাযথভাবে সংরক্ষিত থাকবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে প্রতœতাত্ত্বিক খনন করে আবিস্কৃত হয় নবম-দশম শতাব্দীর একটি বৌদ্ধ বিহার। ২০১৪ সালে টঙ্গিবাড়ি উপজেলার নাটেশ্বরে মাটির তলা থেকে আবিষ্কার করা হয় বৌদ্ধ মন্দির কমপ্লেক্স। অনুসন্ধান, খনন ও আবিষ্কারের ফলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বিক্রমপুর ছিল প্রাচীন চন্দ্র ও বর্ম রাজ বংশের এবং সর্বশেষ সেন রাজাদের রাজধানী। মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে হাজার বছর আগের নৌকা, কাঠের ভাস্কর্য, পাথরের ভাস্কর্য, টেরাকেটাসহ অসংখ্য অমূল্য প্রতœবস্তু। প্রাচীন যুগ ছাড়াও মধ্যযুগে বাবা আদম শহীদ মসজিদ, মুন্সীগঞ্জের মুঘল স্থাপত্য ইদ্রাকপুর দুর্গ, মীরকাদিম খালে মুঘল আমলের সেতু এবং ঊনিশ ও বিশ শতকের অসংখ্য মসজিদ, যা আমাদের উন্নত সভ্যতার পরিচায়ক। |
|