তিনি বলেন, ‘বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট একটি অতি প্রয়োজনীয় দলিল। তাই আমি পাসপোর্ট নিতে এসে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৩৩টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করেন। তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য, লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। এমআরপি প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রেদওয়ান প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান সিকদার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সবিচ ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও মাহবুবুল হক শাকিল উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে এমআরপি চালুর পটভূমি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আধুনিক প্রযুক্তি এক সময় অনেকের কাছে কল্পনা বিষয় ছিল তাঁর সরকার সে প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। এক সময় এমআরপি চালুর ব্যাপারে বাংলাদেশ পেছনে পড়ে থাকতে পারে বলে আমরা শঙ্কিত ছিলাম। কারণ ৮০ থেকে ৯০ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে বসবাস করছে। পাশাপাশি প্রতিদিন বহু লোক বিভিন্ন কাজে বিদেশ যাচ্ছে এবং তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধানে তাঁর সরকার আগের মেয়াদে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণ যাতে এমআরপি পায় সেজন্য সেনাবাহিনীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। সর্বস্তরে ডিজিটাল কর্মসূচি ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এই কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের জীবনযাপন সহজ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি খাতে ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে জনগণ এখন ঘরে বসে সবকিছু পাচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, পাসপোর্ট প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করতে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং এমআরপির মধ্যে ইতোমধ্যে একটি সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এরফলে এমআরপি প্রদান এখন সহজ হবে। কেননা এতে জাতীয় পরিচয় পত্র পেশ করতে হবে। এতে করে জাতীয় পরিচয় পত্রের সফটওয়্যার থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য গ্রহণ সহজ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমআরপি ফি জমা দেয়ার জন্য অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে, যাতে সাধারণ জনগণ সহজে তাদের ঘরে বসে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারে। শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত করা ও দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে আরো এগিয়ে নেয়ার জন্য তাঁর সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার গঠনের পর আমাদের সরকারের লক্ষ্য ছিল জনগণের সেবা এবং সেবক হিসেবে কাজ করা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিজয়ী জাতি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছর সংগ্রাম এবং ৯ মাস স্বাধীনতা যুদ্ধ করে এ জাতি বিজয় লাভ করেছে। তিনি বলেন, এই চেতনা সমুন্নত রেখে এবং মাথা উঁচু করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের একটি পরিবারও যাতে গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে সেজন্য তাঁর সরকার যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই করবে। এ প্রসঙ্গে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনকে গৃহহীন ও ভূমিহীন লোকজনকে খুঁজে বের করা এবং তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন, যাতে তাদের সমস্যা সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণ করা এবং জাতিকে আধুনিক, বিজ্ঞান এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাসহ সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কর্মকর্তারা জানান, ৩৩টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের মধ্যে লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও নওগাঁ এখন থেকে এমআরপি প্রদান করতে পারবে। বাকি ২৮টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস শিগগিরই এমআরপি প্রদান শুরু করতে সক্ষম হবে। |
|