ঢাকা, ৯ এপ্রিল, ২০১৪ (বাসস) : প্রতিথযশা সাংবাদিক, জাতীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবিএম মুসা আজ বিকেলে ল্যাবএইড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন(ইন্নালিল্লাহে.....রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা, এক পুত্র, আত্মীয়-স্বজন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চিকিৎসক ডা. বরেন চক্রবর্তীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক আল ইমরান চৌধুরী বাসসকে বলেন, এবিএম মুসা সোমবার থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আজ দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিশেষজ্ঞ ডা. বরেন চক্রবর্তী বলেন, হার্ট ও কিডনি কাজ না করায় তাকে কৃত্রিম ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, তার হার্টের স্পন্দন স্বাভাবিক রাখার জন্য শরীরে একটি পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছিল তবে শেষ পর্যন্ত তা কাজ করেনি।
বার্ধক্যজনিত রোগে গত ২৯ মার্চ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।
বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মুসার ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন।
এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, এবিএম মুসার মৃত্যুতে দেশ একজন পথিকৃত সাংবাদিককে হারালো । তার ইন্তেকালে মিডিয়া জগতের পাশাপাশি জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
আবুল কালাম আজাদ মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এবিএম মুসা ১৯৩১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফে তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয়। ওই বছরই তিনি ইংরেজী দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার-এ যোগদান করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি ও সানডে টাইমস পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে রণাঙ্গন থেকে সংবাদ পাঠাতেন।
তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রেসক্লাবের চারবার সভাপতি ও তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তিনি পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন পরে মর্নিং নিউজের সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফেনী আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন।
এবিএম মুসা ১৯৭৮ সালে ব্যাংককে জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
এবিএম মুসা ১৯৮৫ সালের ১৫ মে বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৭ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত এ সংস্থার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে প্রায় এক বছর তিনি দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদক এবং অন্যান্য সম্মাননা লাভ করেন তিনি।