ঢাকা, ১৭ মার্চ, ২০১৪ (বাসস) : বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ সোমবার স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। একই সঙ্গে জাতি দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপন করেছে।
দেশ জুড়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে আরো ছিল জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মোনাজাত, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বইমেলা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা, পুরস্কার বিতরণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার প্রভৃতি।
ভোর সাড়ে ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে দলীয় প্রধান হিসেবে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ওবায়দুল কাদের ও সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা ত্যাগ করার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
এ ছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশে অবস্থিত প্রবাসী আওয়ামী লীগ। আলোচনা সভা শেষে কেক কাটা হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কলাবাগানস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রফেসর ড. এম আখতারুজ্জমান, সাংবাদিক শফিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা এডভোকেট আব্দুস ছালাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এস এ মালেক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী শক্তিকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
এদিকে সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লারে সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ ও শহীদ কাজী আরেফ ফাউন্ডেশন। শহীদ কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুন্নেছা মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধু ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে টিএসসির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ।
এদিকে জাতির জনকের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বায়তুল্লাহ কাদেরী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান প্রমুখ।
এ ছাড়াও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শান্তিনগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীনের পরিচালনায়, যুগ্ম-সম্পাদক হারুন-অর রশিদ রনি, দফতর সম্পাদক আহমাদ রাসেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ, সম্মিলিত বঙ্গবন্ধু সমর্থক ঐক্যজোট, বাংলাদেশ আওয়ামী তরুণ লীগ, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে।