দেলোয়ারজাহিদ//
এ পুস্তকটি পর্যালোচনায় বইটির সংক্ষিপ্তবিবরণ,প্রকাশেরউদ্দেশ্য, পাঠ্যক্রম ও বিষয়বস্তু ছাড়াও লেখকদ্বয়ের মেধা, যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার উপর বিশেষভাবে ফোকাস করা হয়েছে.পেশাধারী পুস্তক পর্যালোচনার সকলবিষয় মাথায় রেখে কাজটি করার চেষ্টা করা হয়েছে।
তাৎপর্য্যপূর্ণ ভাবেএ পর্যালোচনায় উপস্থাপিত হয়েছে নিরিক্ষনের বিবেচনায় নেয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো, যেমন:
শিরোনাম – ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা
লেখক- ড.আনোয়ার জাহিদ, এস.জে ও
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর পরিচালক, গবেষণা
ড. তাপস কুমার বিশ্বাস
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশান এর পরিচালক, গবেষণা
প্রকাশক- শামারাপ্রকাশনী, চৌধুরীপাড়া,কুমিল্লা
প্রকাশক কাল- ২০১৩
মুদ্রণ- ইন্ডাষ্ট্রীয়েল প্রেস, কুমিল্লা
স্বত্ব- লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
মূল্য- তিনশত পঞ্চাশটাকা
পৃষ্টা- ৩৬৬
আইএসবিএনঃ ৯৭৮-৯৮৪-৩৩-৭৮০৩-৩
প্রথম বাক্যেই উচ্চ শিক্ষায় ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা বইটির চাহিদার কথা বলা হয়েছে।লেখকদ্বয় তাদের কথায় স্পষ্টতঃই ফুটিয়ে তুলেছেন যে বিশ্বায়নের যুগে ব্যাপক এ চাহিদার বাজারে এমন একটি পুস্তকের কতটুকু প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ কোর্স হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ইংরেজী ভাষায় এ বিষয়ে প্রচুর বই-পুস্তক থাকলে ও এগুলোর প্রাপ্তি খুব সহজ নয়। মাতৃভাষায় কোন বিষয়ে যতটা সহজবোধ্য হয় অন্য ভাষায় কখনো ততটা নয়।
লেখকদ্বয়ের এ যুক্তির সাথে ভিন্নমত প্রকাশের কোন অবকাশ নেই। সেনেগাল সহ কয়েকটি দেশে তথ্যানুসন্ধান ও গবেষণায় দেখা গেছে মাতৃভাষায় শিক্ষাদান অনেক বেশী কায্যকর ও ফলপ্রশু। ইউরোপের কোন কোন দেশে এ বিতর্ক এখন তীব্র হয়ে উঠেছে। রোমানিয়া সহ কয়েকটি দেশে মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর স্বাধিনতায় ভাষা ও সংস্কৃতিকেই চেতনার উৎস্য হিসেবে নিয়েছে কিন্তু তারপর ও ভাষাকে যথাযথ ভাবে আমরা সমৃদ্ধশালী করতে পারিনি, পারিনি আমাদের পাঠ্যক্রম, শিক্ষা ব্যবস্থা ও উপকরণগুলোকে ঢেলে সাজাতে।
লেখকদের ভাষা বিষয়ে অভিব্যক্তিতে কোন রাজনৈতিক বোধ রয়েছে বলে মনে হয়নি। তবে এতে পেশাধারীত্বের ছাপ অত্যন্ত ষ্পষ্ট। দীর্ঘ ২৫ বছরের অধিক সময় পেশাজীবিদের শিক্ষাদান ও গবেষণা কাজের চাহিদা থেকে তারা যে অনুপ্রানিত এটা বুঝা যায়। কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে ছাত্র-শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী বইটিকে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে. সাধারন পাঠকদের পাঠ প্রক্রিয়ায় কিছুটা হলেও ছেদ পড়তে পারে। তবে আগামীতে এর সমন্বয় সাধন করতে পারলে পাঠককুল খুবই উপকৃত হবে।
ব্যবসা ও বিপণন গবেষণার উপর যে কটি বিদেশী পুস্তকের সাহায্য নেয়া ও তথ্যসূত্রের বরাত দেয়া হয়েছে এতে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা ও গভীরতার ছাপ পাওয়া যায়। এ পুস্তকে উচ্চতর বা উন্নততর শিক্ষার জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই আশাবাদী। বইটি তার উদ্দেশ্য পূরণে কতটা সার্থক তা তুলনা করার মতো বাংলায় কোন বই এখনো খুজে পাইনি।
একজন গবেষক, একজন শিক্ষক হিসেবে মাতৃভাষায় এধরনের একটি বই পড়ায় আমার আগ্রহ ছিলো দীর্ঘদিনের। স্নেহাস্পদ অনুজ আনোয়ার জাহিদ ও তার সহকর্মী তাপস বিশ্বাস অত্যন্ত নিপুনতার সাথে এ কাজটি সম্পন্ন করায় খুবই খুশি হয়েছি। সে সাথে গভীরভাবে অনুপ্রানিত হয়েছি নিজেরই অসমাপ্ত একটি প্রকাশনার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে।দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা ও শান্তি সংস্কৃতি বিষয়ে একটি বই প্রকাশনায় এ ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা গ্রন্থটি সহায়ক হবে।
বার্ডের মহাপরিচালক মোঃ মসিউর রহমান এর মুখবন্ধটি স্বল্প কথায় খুবই সুচিন্তিত মতামত। এর মধ্যেও পুস্তকটি প্রকাশের আবশ্যিকতা নিপুনভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি যথার্থই অনুধাবন করেছেন যে সাম্প্রতিক কালে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতিতে এ ধরনের গবেষনা সহায়ক গ্রন্থের প্রয়োজনীয়তা ও অপরিহার্য্যতা।
শুধুমাত্র বানিজ্য অনুষদের শিক্ষার্থী এবং গবেষকগণই নন বরং সকল শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা বইটিপ্রাসঙ্গিক শিক্ষণীয় বই হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যেকোনগবেষণা কাজে লেখকদের লব্দ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এপুস্তকটি সহায়ক ও সংক্ষিপ্ত গাইড হিসাবে সুপারিশ করা যায়. উন্নত স্নাতক এবং স্নাতক শ্রেণীতে ব্যবহারের জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি আদর্শ বই. এতেসম্পূর্ণ বাজার গবেষণা প্রক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও উপাদান রয়েছে। পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্য,একটি কাঠামো হিসেবে বাজার গবেষণা প্রক্রিয়াকেব্যবহার, বইয়ের পদ্ধতি অনুকরণে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ, বর্ণনা বা ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ফ্যাক্টরগুলোবিশ্লেষণ, এবং ক্লাস্টারের বিশ্লেষণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘন ঘন ব্যবহৃত পরিমাণগত বিশ্লেষণ কৌশল, আলোচনা. প্রায় প্রতিটি কৌশলও তাত্ত্বিক পছন্দের বাজার নিয়ে ও আলোচনা হয়েছে।
গোইডো স্মীথ (পিএইচডি) একটি জার্মান শিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ১৯৯৭-৯৯ সালে আমার পিএইচডি সুপারভাইজার ছিলেন । তিনি একাডেমিক লেখায় লেখকের মূল আগ্রহের মূল্যায়ন, জরিপ গবেষণা, গবেষণা সাহিত্য রিভিউ, আবহ, এবং মান মূল্যায়ন এর উপর সবিশেষ জোর দিতে বলতেন। লেখকদ্বয় পুস্তকটিতে যে তাত্ত্বিক আলোচনা, তথ্য বিন্যাস ও কিছু উদাহরন দিয়েছেন এগুলো পাঠকের মনযোগ গভীরভাবে আকৃষ্ট করবে।
•বইয়ের থিম ও বিষয়বস্তুগুলো অত্যন্ত সুবিন্যস্ত।
•লেখায় এর যাত্রা থেকে শুরু করে শেষ অবধি ধারাবাহিকতা রয়েছে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে বানান ও ব্যাকরণগত ত্রুটিমুক্ত রাখার বিষয়ে ও লেখকের প্রচেষ্টা লক্ষণীয়।
সূচিপত্র –৩৬৬ পৃষ্টার এ পুস্তকটিতে ১৫টি অধ্যায়ের ৮ম, ১১তম, ১৩তম এর উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের থিওরী, উপাত্ত শ্রেনীবব্ধকরনের উদ্দেশ্য (১৩.২.৩) এবং ১৪ ও ১৫ অধ্যায় লিখেছেন ড. তাপস আর অধ্যায় ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ট, ৭ম, ৯ম, ১০ম, ১২তম অধ্যায়গুলো রচনা করেছন ড. আনোয়ার…লেখকদের বিশেষায়িত জ্ঞান, দক্ষতা ও মেধা তাদের তাদের নিজ নিজ রচনা শৈলীতে অত্যন্ত পরিস্ফুট. তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
উপসংহারে ব্যবসা ও বিপণন গবেষণা বইটি পাঠককুলের কাছে এর স্বীয় বৈশিষ্টের জন্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হবে।
লেখক: দেলোয়ার জাহিদ, রিচার্স ফেলো, সেন্ট পলস কলেজ, ইউনির্ভাসিটি অব ম্যানিটোভা, কানাডা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।সম্পাদক, সমাজককন্ঠ এবং সভাপতি, বাংলাদেশপ্রেসক্লাবসেন্টারঅবআলবার্টা(বিপিসিএ)।