ঢাকা, ১৫ আগস্ট ২০১৫ (বাসস) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাবি আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন আভিজাত্য নিয়ে রাজনীতি করেছেন। ঘাতকদের বুলেটের সামনেও তিনি অবিচল ছিলেন। এই আভিজাত্য নিয়েই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করেন। তাঁকে হত্যা করে বাঙালী জাতি বিশ্বাসঘাতকের জাতিতে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তৎকালীন জার্মানী চ্যান্সেলর বাঙালি জাতিকে বিশ্বাসঘাতকের জাতি হিসাবে আখ্যা দেন। বিশ্বাসঘাতকের এই অভিধা থেকে মুক্তি পেতে এবং কৃতজ্ঞ জাতি হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন উপলক্ষে ঢাবি কর্তৃপক্ষ আজ দিনব্যাপি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে সকালে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের উপর এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ড. আরেফিন সিদ্দিক বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ ছিলেন। অভিধানে যত ভালো গুণ আছে, সবকিছুরই অধিকারী ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের অত্যন্ত সম্মান করতেন। অন্যদের ‘তুই’ বলে সম্বোধন করলেও, তরুণ শিক্ষকদেরও ‘আপনি’ সম্বোধন করতেন। তিনি অত্যন্ত সৎ, উদার ও সাহসী ছিলেন। সাধারণ মানুষের ভাগোন্নয়নের সংগ্রামে নিয়োজিত এই মহান নেতা মৃত্যু, জেল, জুলুমকে কখনও ভয় পাননি।
ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন। ঢাবি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ।
আলোচনা সভা শেষে ‘আরাধ্য বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। পরে উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন করেন। এর আগে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় মসজিদসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
সকালে ঢাবি’র সব ভবন ও হলে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে ঢাবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।