নয়াদিল্লী, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ (বাসস) : ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বলেছেন, তাঁর সরকার সীমান্ত চূক্তি বাস্তবায়ন এবং তিস্তা চুক্তি প্রণয়নের জন্য একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সংগে সাক্ষাত করলে তিনি এ কথা বলেন। তিনি সীমান্ত চূক্তি বাস্তবায়ন ও তিস্তা চূক্তি প্রণয়নের ব্যাপারে দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ স্পীকার ভারতের লোকসভার স্পীকার মীরা কুমারের আমন্ত্রণে বর্তমানে এখানে অবস্থান করছেন। সাক্ষাতকালে বাংলাদেশের স্পীকার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যেকার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা দু-দেশের সম্পর্ক আরো উন্নয়নের লক্ষে উভয় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও কথাবার্তা বলেন।
বাংলাদেশ এবং ভারতের বর্তমান সম্পর্ক সর্বোচ্চ সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর এবং ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরকে দু-দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইল ফলক হিসেবে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।
স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলাদেশের সাথে স্বাক্ষরিত সীমান্ত চূক্তি বাস্তবায়ন এবং তিস্তার পানি বন্টন চূক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে উল্লেখ করলে ড. মনমোহন সিং বলেন, এ-দুটি বিষয়ে ভারত বাংলাদেশের কাছে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ।
ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর লক্ষে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই সুযোগ ব্যবহার করে বাংলাদেশ ভারতের সাথে তাঁর বাণিজ্যিক ঘাটতি কমিয়ে আনতে পারবে। তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে যে সকল প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করতে তাঁর সরকার আরও তৎপর হবে বলে বাংলাদেশের স্পীকারকে আশ্বস্ত করেন।
স্পীকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, দু-দেশের সংসদ সদস্যদের মধ্যে সফর বিনিময় বৃদ্ধির উপর গুরত্বারোপ করে বলেন, এতে উভয় দেশের পার্লামেন্ট সদস্যরা উপকৃত হবেন।
মনমোহন সিং বাংলাদেশের নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী সহিংসতারোধে সরকা পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় তিনি শেখ হাসিনা সরকারকে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয়েই সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে হবে।
আলোচনাকালে ড. মনমোহন সিং বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দু-দেশের মধ্যে আস্থা এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বজায় রেখে দু-দেশ কাজ করে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এরআগে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ভারতের রাজ্য সভার বিরোধীদলের নেতা অরুণ জেটলীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে তাঁরা গণতন্ত্রের উন্নয়ন এবং সংসদীয় গণতন্ত্রকে আরও কার্যকর করার ব্যাপারে মতবিনিময় করেন। এ সময় অরুণ জেটলী আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা উল্লেখ করে বলেন, কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতকে অনেক ছাড়িয়ে গেছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রসংশা করেন।
ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক এ করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন ।