ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ (বাসস) : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বিভিন্ন ধর্মের মেলবন্ধনের অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশ।
তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের চিরন্তন সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা এবং দেশ ও বিশ্ব শান্তির জন্য মনীষী ও মহাপুরুষদের কর্মময় জীবনের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান।
স্পিকার আজ ঢাকার সবুজবাগস্থ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ আয়োজিত অতীশ দীপংকর ও বিশুদ্ধানন্দ শান্তি স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ এমপি।
পন্ডিত অতীশ দীপঙ্করের আদর্শের স্মৃতিচারণ করে স্পিকার বলেন, অতীশ দীপংকর ছিলেন বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানসাধকদের একজন। হাজার বছর আগে তিনি এ বাংলা থেকে জ্ঞানের আলো নিয়ে পৃথিবীর পথে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এ সাধক নিজেই শুধু আলোকিত মানুষ ছিলেন না, অপরকে আলোকিত করার সাধনা করে গেছেন। জ্ঞানের পথে, শিক্ষার পথে থেকে আজীবন তিনি ধর্ম, দর্শন, শিক্ষা ও মানব কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন। তিনি সারা জীবন যে জ্ঞানের সাধনা করেছেন সে জ্ঞান যাতে চিরদিন মানুষের কল্যাণে আসে সে লক্ষ্যে আজীবন প্রয়াস চালিয়ে গেছেন।
গৌরবময় বৌদ্ধ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মহাসংঘনায়ক বিশুদ্ধানন্দ মহাথের’র কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক উলে¬খ করে স্পিকার বলেন, মহাসংঘনায়ক বিশুদ্ধানন্দ মহাথের মহাপুরুষ অতীশের আদর্শের অনুসরণে সার্বজনীন মানবতা ও মনুষ্যত্বের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে আমাদের স্মৃতিতে অ¤¬ান হয়ে রয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার তাঁর কর্মখ্যাতির স্বীকৃতিস্বরূপ মরনোত্তর একুশে পদক দিয়ে ইতিহাসের পাতায় তাকে চিরঞ্জীব করে জাতিকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্ম নিরপেক্ষতা অন্যতম। সংবিধানে আমাদের দেশের সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রীতির এ দেশে মহামনীষীদের জন্ম আমাদের ধর্ম, দর্শন ও শিক্ষার সকল ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করে।
তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এ দেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা যেখানে প্রত্যকটি নাগরিক নিজ নিজ ধর্ম পালন করে দেশের জন্য কাজ করবেন। মহান স্বাধীনতার চেতনাকে সমুন্নত রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সকল শ্রেণী, পেশা ও ধর্মের মানুষকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
স্পিকার অনুষ্ঠানে ২০১৪ সালে অতীশ দীপংকর ও বিশুদ্ধানন্দ শান্তি স্বর্ণপদক প্রাপ্ত দেশী-বিদেশী ০৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন। অতীশ দীপংকর পদক প্রাপ্তরা হলেন- থাইল্যান্ডের প্রখ্যাত ৩ জন বৌদ্ধ ভিক্ষু: কোনকায়েন প্রদেশস্থ থাট বিহারের প্রধান অধ্যক্ষ ড. প্রাথপ কিত্তিরাংশ্রি, প্রাচীনবুরি প্রদেশস্থ শান্তিবিসুক বিহারের প্রধান অধ্যক্ষ ফ্রা. ড. মহা পলাচাই থাওরারো এবং লয় সিটিস্থ পুতামপ্রা বিহারের প্রধান অধ্যক্ষ ফ্রা. রোন্নাকৃট শ্রীলায়ান।
বিশুদ্ধানন্দ পদকপ্রাপ্তরা হলেন, ড. হাছান মাহমুদ এমপি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা মোঃ শাহজাহান বাবলু ও ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের ভাইস-চেয়ারম্যান শিক্ষানুরাগী লায়ন খন্দকার সালিমা রওশন।